Javed Akhtar in conversation with Nasreen Munni Kabir
Ratings1
Average rating4
One of the great thinkers of Indian cinema, Javed Akhtar needs no introduction. As a screenplay writer, he and Salim Khan wrote the dialogue for blockbusters like Zanjeer, Deewar, and Sholay; as a songwriter, he has composed a huge variety of songs including, 'Yeh kahaan aa gaye hum', 'Kuchh na kaho', and 'Kal ha na ho'. Talking Films and Songs showcases both these aspects of Javed Akhtar's versatile genius, through freewheeling conversations with Nasreen Munni Kabir. Originally published in 1999 (Talking Films) and 2005 (Talking Songs), these extremely popular books have delighted readers, researchers, and scholars of Indian film. Full of wit and wisdom, this edition is a must-read for Hindi cinema enthusiasts.
Reviews with the most likes.
পাশ্চাত্য ধ্রুপদী সংগীত একদম সাধারণ মানুষের প্রাণের গান হয়ে উঠতে পারেনি। পপ রক জ্যাজ ব্লুজ র্যাপ কান্ট্রি মেটাল (এবং আরো অনেককিছু) সমন্বিত পাশ্চাত্য সংগীতের যে আধুনিক ধারাটি এখন বিশ্বব্যাপী শ্রোতাদের কাছে পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, খুব টেনেটুনেও তার ইতিহাস দেড়শো বছরের বেশি পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এবং খাঁটি পাশ্চাত্য ধ্রুপদী সংগীতের সঙ্গে এইসব আধুনিক সংগীতধারাগুলির আত্মীয়তা খুঁজতে হলে খুব সরু স্রোত হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে, কিন্তু সেই অন্বেষণ হবে খড়ের গাদায় আলপিন খোঁজার শামিল। পাশ্চাত্য ধ্রুপদী সংগীত আজও তার স্বকীয় বনেদিয়ানা ধরে রাখতে পেরেছে। হাওয়াই চপ্পল, হাফপ্যান্ট আর টিশার্ট পরে কেউ যদি বেঠোভেনের পিয়ানো কনচার্টোর অনুষ্ঠান শুনতে যায়, আজকের দিনেও তাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে।
ভারতীয় উপমহাদেশীয় ধ্রুপদী সংগীত কিন্তু এই বনেদিয়ানার তোয়াক্কা করেনি। উপমহাদেশীয় ধ্রুপদী সংগীতবিশ্বের সমৃদ্ধির পিছনে সমাজের “এলিট” সম্প্রদায়ের পৃষ্ঠপোষকতার ভূমিকা আছে ঠিকই, কিন্তু তবুও আমাদের ধ্রুপদী সংগীতকারেরা কেবল এলিট শ্রোতাদের গান শুনিয়েই পরিতৃপ্ত হননি। রাগ সংগীতের কাঠামোকে আশ্রয় করেই তাঁরা নিজেদের সংগীতকে ছড়িয়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষের গৃহ এবং মনের অন্দরমহলে। তাঁরা বাইজিনাচের সঙ্গে ঠুমরি গেয়েছেন, ফসলের ক্ষেতে কাজ করতে করতে কাজরি গেয়েছেন, আড্ডার বৈঠকে টপ্পা গেয়েছেন, ঘরোয়া আসরে গজল গেয়েছেন কিংবা ধর্মীয় জলসায় কাওয়ালি গেয়েছেন। একটা উদাহরণ দেখা যাক।
রাগসংগীতের “খামাজ” (বা খাম্বাজ) নামক একটি ঠাটের (ঠাট মানে প্রকরণ) কাঠামোতে তৈরি বিখ্যাত ঠুমরি গেয়েছেন বেগম আখতার (“অ্যায় মহব্বত তেরে আনজাম পে রোনা আয়া”)। সেই একই ঠাটের তিলক কামোদ রাগে বিখ্যাত ভজন গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর (“বৈষ্ণব জন তো”— মহাত্মা গান্ধীর প্রিয় গান))। খামাজের একতালে গান লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ (“আমি চিনি গো চিনি তোমারে”)। একই রাগকে আশ্রয় করে অসামান্য কাওয়ালি লিখেছেন নবাব সাদিক জং বাহাদুর (“কানহাইয়া, ইয়াদ হ্যায় কুছ ভি হামারি?”— ধর্মীয় সম্প্রীতির চমৎকার একটি উদাহরণ এই গানটি কেউ না শুনে থাকলে প্লিজ শুনুন!)। “অভিমান” সিনেমায় শচীন দেব বর্মনের সুরে ডুয়েট গেয়েছেন লতা-কিশোর (“তেরে মেরে মিলন কি ইয়ে র্যায়না”)। আবার এই তিলক কামোদ রাগেই উস্তাদ রশিদ খাঁ “জব উই মেট” সিনেমায় গান গেয়েছেন (“আওগে জব তুম মেরে সাজনা”)। স্মরণাতীত কাল আগে সৃষ্টি হওয়া একটি ধ্রুপদী রাগের প্রত্যক্ষ ব্যবহার, জনপ্রিয় সংগীত মাধ্যমে আজও হয়ে চলেছে অবিরাম! তলিয়ে ভেবে দেখতে গেলে এটা একটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার।
এই অবিশ্বাস্য ব্যাপারটি অহরহ ঘটে চলেছে হিন্দি সিনেমায়। হিন্দি চলচ্চিত্র নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত গবেষণাধর্মী কাজ করে চলেছেন নাসরিন মুন্নি কবির। এই বইটি কবি, গীতিকার এবং চিত্রনাট্য লেখক জাভেদ আখতারের সঙ্গে মুন্নি কবিরের সুদীর্ঘ কথোপকথনের মুদ্রিত রূপ। হিন্দি সিনেমা এবং ফিল্মি গানের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য নিয়ে দুজনের এই আলোচনাটি পড়ে অত্যন্ত ঋদ্ধ হলাম। উপমহাদেশীয় ধ্রুপদী ও লোকজ নাট্যকলা এবং সংগীতের উত্তরাধিকারের সর্বশেষ নমুনা হলো হিন্দি সিনেমা। জাভেদ আখতার বলেছেন, হিন্দি সিনেমার সত্তাটি “সর্বভারতীয়”, অথচ সমগ্র ভারতের কোনো অংশের সঙ্গে এর মিল নেই। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মতো “হিন্দি সিনেমা” হলো একটি আলাদা রাজ্য। জাভেদ আখতার খুব চমৎকার কথা বলতে পারেন। আমি হিন্দি সিনেমা খুব বেশি দেখিনা, কিন্তু হিন্দি ফিল্মের গানের ভীষণ বড় ভক্ত। আমার কাছে এই বইটি একটা আনন্দময় উপহারের মতো উপভোগ্য মনে হয়েছে।
জাভেদ আখতারের বাগ্মীতার সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করেছেন নাসরিন মুন্নি কবির। সত্তরের দশকে মেইনস্ট্রিম হিন্দি সিনেমাজগতে একটা বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন সেলিম খান (সালমান খানের বাবা) এবং জাভেদ আখতার চিত্রনাট্যকার জুটি (“সেলিম-জাভেদ” নামে পরিচিত)। দুজনের লেখা চিত্রনাট্য থেকে তৈরি হয়েছে একের পর এক ছাঁচভাঙা সিনেমা (জঞ্জির, দিওয়ার, শোলে, ত্রিশূল, ডন, ইত্যাদি)। সুতরাং হিন্দি সিনেমা জগতের “ইউনিক” বৈশিষ্ট্য এবং হিন্দি সিনেমার উপযোগী চিত্রনাট্য লেখার কায়দা— এই দুই বিষয়েই কথা বলার উপযুক্ত মানুষ হলেন জাভেদ আখতার। পরবর্তীকালে চিত্রনাট্য লেখার কাজে ইস্তফা দিয়ে তিনি পুরোপুরি গান লেখার কাজ শুরু করেন। আমার ব্যক্তিগত মতে, হিন্দি ফিল্মের উর্দুভাষা-আশ্রিত গানের লিরিক লেখার মুনশিয়ানা এবং সত্তর দশক পরবর্তী আধুনিকতা— দুটো বিষয়কে সবচেয়ে সফলভাবে যদি কেউ মিশিয়ে দিতে পেরেছেন, তিনি হলেন জাভেদ আখতার।
বইতে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছি হিন্দি ফিল্মের গান নিয়ে তাঁর কথাবার্তা। কথায় কথায় তিনি বিশ্লেষণ করেছেন শাহির লুধিয়ানভি, শৈলেন্দ্র, শাকিল বদাউঁনি, মজরুহ সুলতানপুরি, কৈফি আজমির মতো নিজের পূর্বসূরিদের লেখা গান নিয়ে। একই সঙ্গে এমন কিছু কথা বলেছেন যা কিনা আমারও মনের কথা। যেমন, হিন্দি ফিল্মের সবচেয়ে আন্ডাররেটেড সংগীত রচয়িতার নাম আনন্দ বকশি। কিংবা, ‘Cool' isn't the opposite of poetic. Somehow people have come to believe that one can either be modern or literary. ভিতরে ভিতরে জাভেদ আখতার আসলে একজন কবি। তবু তিনি বলেছেন, যে-কথা কোনোভাবে বলা যায় না, এমনকি কবিতাতেও বলা যায়না, সেই কথা গানের মাধ্যমে বলে ফেলা যায়। উপমহাদেশীয় ধ্রুপদী রাগসংগীত এবং উর্দু ভাষার সাংস্কৃতিক বনেদিয়ানা— এই দুটো উৎকৃষ্ট জিনিসকে আমি একত্রে খুঁজে পাই হিন্দি ফিল্মের গানে। জাভেদ আখতারের প্রাণবন্ত আলাপচারিতায় ফিল্মের গানের প্রতি আমার চিরকালীন ভালোবাসা আরো একটু বেড়ে গেলো।